ভারতবর্ষের এই রেল স্টেশনে বছরের মাত্র ১৫ দিন থামে ট্রেন, জানেন এর নাম কি ?জানতে হলে অবশ্যই ক্লিক করুন!The train stops only 15 days a year at this railway station in India. Do you know what it's called? Click here to know!
বহু বছর ধরে নির্জন হয়ে পড়ে রয়েছে এই রেল স্টেশন। এখানে কোনও টিকিট কাউন্টার নেই। এই স্টেশনে নেমে সাধারণত সবাই পুনপুন নদীর তীরে পূর্বপুরুষদের পিন্ড দান করেন।
দূরপাল্লার ট্রেন সফর করার সময় অনেক জায়গার ওপর দিয়ে যাত্রীরা যান, যার নামই হয়ত শোনেননি কখনও। অনেক প্রত্যন্ত এলাকার মধ্যে দিয়ে, মাঠ-ঘাট পার করে ছুটে যায় ট্রেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রেল লাইনের দুপাশে জনবসতি কমই থাকে। অনেক অজানা স্টেশন পড়ে রেল যাত্রার মাঝে। এমনও স্টেশন আছে যেখানে ট্রেন প্রায় সারা বছর থামেই না। তাহলে এমন স্টেশন রাখার কী মানে?
এই স্টেশনে ট্রেন থামে, কিন্তু বছরে একবার। স্টেশনটি বাংলার ঠিক পাশের রাজ্য বিহারে। বিহারের ঔরঙ্গাবাদ জেলার এই স্টেশনের নাম ""অনুগ্রহ নারায়ণ রোড ঘাট""। পিতৃপক্ষের সময় সেখানে ট্রেন দাঁড়ায় ১৫ দিনের জন্য। অন্যান্য দিনগুলিতে এই স্টেশন একেবারে নির্জন থাকে। পিতৃপক্ষের প্রথম দিনে পুনপুন নদীতে স্নান ও তর্পণ করার প্রথা রয়েছে। তাই ওই সময় দেশি ও বিদেশি তীর্থযাত্রীদের আগমণ ঘটে পাটনার পুনপুন ঘাট বা ঔরঙ্গাবাদ জেলার অনুগ্রহ নারায়ণ রোড ঘাটের কাছে।
মনে করা হয় পিন্ড দান প্রথা এখানেই হয়েছিল প্রথম। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, নেপাল এবং অন্যান্য দেশ থেকে তীর্থযাত্রীরা তাঁদের পূর্বপুরুষদের পিন্ডদান করতে এখানে আসেন। তর্পণ এবং শ্রাদ্ধের জন্যই অনুগ্রহ নারায়ণ রেলওয়ে ঘাট স্টেশনের কাছে যান তাঁরা। পিতৃপক্ষের সময়, দিনে ১০ হাজারের বেশি লোক যান ওই ঘাটে। অনেক মহিলাও থাকেন। স্টেশন চত্বরে পানীয় জল, টয়লেট, মহিলাদের চেঞ্জিং রুম নেই, ফলে অনেকেই অসুবিধায় পড়েন।
এই পুনপুন নদীকে পুরাণে আদিগঙ্গা বলা হয়। বিহারের ঔরঙ্গাবাদে ঝাড়খণ্ডের সীমান্তে নবনগর ব্লকের তান্ডওয়ার কাছে এই নদীর উৎপত্তি। এখান থেকে উৎপন্ন এই পৌরাণিক নদীটি ঔরঙ্গাবাদ, আরওয়াল, জেহানাবাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাটনা জেলার গঙ্গায় মিলিত হয়েছে। পুনপুন নদীর ঘাটে প্রথমে পিন্ড দান না করলে, গয়ায় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে করা পিন্ডদান বৃথা বলে বিবেচনা করেন অনেকেই। এই স্টেশনটি বহু দশক আগে তৈরি করা হয়েছিল যাতে পুনপুন নদীতে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করতে পারেন সাধারণ মানুষ।