ফের বড় সাফল্য পেল বিধান নগর সাইবার পুলিশ
মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের টোপ, উধাও ২.৬ কোটি!
এয়ারপোর্ট থানার অন্তর্ভুক্ত কৈখালি লেনের এক বাসিন্দা সম্প্রতি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ মারফত জানান, নিজেদের মোবাইল ফোন সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাঁকে ফোন করে কিছু ব্যক্তি, বলে যে তাঁর জমিতে মোবাইল ফোন টাওয়ার বসাবে তারা, যার ফলে অগাধ অর্থলাভ হবে তাঁর।
এই প্রস্তাব বিশ্বাসযোগ্য করতে বেশ কিছু জাল নথিপত্র, যেমন যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, নামী মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ইত্যাদির কাগজপত্রও তাঁকে পাঠায় তারা। শর্ত একটাই, টাওয়ার বসানোর খরচ বাবদ বেশ কিছু টাকা দেবেন তিনি।
সেই 'বেশ কিছু' যে কতটা হতে পারে, তা কল্পনাতীত। তাঁর জমিতে টাওয়ার স্থাপনের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিজের জমি বিক্রি করে, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের কাছে ধার করে, এবং ব্যক্তিগত অবসর তহবিল পর্যন্ত ভেঙে অর্থ যোগাড় করেন অভিযোগকারী। অর্থের মোট পরিমাণ -- ২.৬ কোটি টাকা!
মামলার তদন্তকারী অফিসার সাব-ইন্সপেক্টর শেখ তাজউদ্দিন এবং তাঁর সহকর্মীরা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে একাধিক অভিযান চালিয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করে ৯ মে ভাটিন্ডা, রাজারহাট থেকে গ্রেফতার করেন নিরুপম মুখার্জীকে, সহায়তায় রাজারহাট থানা। জিজ্ঞাসাবাদে ভুয়ো টাওয়ার স্থাপন চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে। তার বয়ানের ভিত্তিতে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার অন্তর্গত বিবাদী বাগ এলাকায় একটি অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ১২ জনকে, যাদের কাজ ছিল প্রতারিতদের সঙ্গে কথা চালিয়ে যাওয়া।
ধৃতরা সকলেই অনূর্ধ্ব-ত্রিশ, তাদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু স্মার্ট ফোন এবং কীপ্যাড ফোন, অজস্র গ্রাহকের তথ্য, জাল নথিপত্র, এবং লেনদেনের রসিদ। পুরো ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।