বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গল নিয়েই টলিউডে তৈরি হচ্ছে বিরাট বাজেটের সিনেমা! সবটা জানলে খুশি হবে সারা উত্তরবঙ্গ বাসী!!


বাংলা ছবির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ছবি হতে চলেছে শুভ্রজিৎ মিত্রের দেবী চৌধুরানী। এই সিনেমাটা নিয়ে উত্তরবঙ্গ বাসীর যথেষ্ট ইন্টারেস্ট রয়েছে। কারণ এই ছবি তৈরি হচ্ছে উত্তরবঙ্গের এক সুবিশাল গভীর জঙ্গলের ইতিহাসিক চরিত্র ভবানী পাঠক কে নিয়ে। হয়তো বহু ছবির মতো আমাদের জলপাইগুড়ির সাধারণ মানুষের আশা থাকাটাই স্বাভাবিক। তবুও এছবি সংক্রান্ত বিভিন্ন খবর, ছবিটা হয়ে ওঠার গল্প আমাদের বেশ আকর্ষণ করছে।
ব্রিটিশ আমলে জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুরের ঘন জঙ্গল ছিল ভবানী পাঠকের বিচরণ ক্ষেত্র। আর এই ঐতিহাসিক চরিত্র আমরা জানতে পারি বাংলা উপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরানী উপন্যাসে। আজকের জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রয়েছে বৈকুণ্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশন। দেবী চৌধুরানীর মূল চরিত্র ভবানী পাঠক এই বৈকন্ঠপুর ঘন জঙ্গলের বেতাস বাদশা ছিলেন। লোকোমুখে এখনো শোনা যায় অত্যাচারী জমিদারদের ধন সম্পদ লুট করে তিনি সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন।
এ ছবিতে শেষ পর্যন্ত কী হবে, জানি না।তবে সারা উত্তরবঙ্গের লোক যে এই সিনেমা নিয়ে আকর্ষিত হয়ে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই সিনেমা নিয়ে আগ্রহের বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, তার কয়েকটি কারণ নিম্নে সংক্ষিপ্ত  আলোচনা করলাম। 

১) পরিচালকের দাবি এই বাংলা ছবির বাজেট এবং ব্যাপ্তি বিশাল। এত বড় স্কেলের বাংলা ছবি এর মধ্যে হয়নি। অন্তত ১৬ ভাষায় মুক্তি পাওয়ার কথা। ছবিটা প্রযোজনা করছে আমেরিকা এবং ইংল্যান্ড। তুলনায় অল্প পরিচিত পরিচালক, অন্য প্রযোজক- ইন্টারেস্টের জায়গা এটাই। মাঝে নাকি ছবিটার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। 

২) দেবী চৌধুরানী, ভবানী পাঠক মানে শুধুই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস নয়। এঁরা ঐতিহাসিক চরিত্র। ব্রিটিশ আর্কাইভ ঘেঁটে নিজের মতো করে ছবিটা ডিজাইন করেছেন। দাবি পরিচালকের। সিনেমা ভাল হতে পারে। আবার জঘন্যও হতে পারে। কিন্তু সিনেমার ভাষার দিকে কম নজর দিয়ে হাতে উপন্যাস নিয়ে বসে পৃষ্ঠা অনুযায়ী মেলানোর প্রবণতা আরও বিশ্রী। 

৩) শুভ্রজিৎ বলছেন, তাঁর দেবী চৌধুরানী ভীষণভাবে অ্যাকশন নির্ভর ছবি হবে। সেই সময়কার ভারতীয় মার্শাল আর্ট এবং অস্ত্র নিয়ে নাকি প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে। মেনে চলা হয়েছে ধনুর্বেদ। পরিচালকের দাবি, মশালা সাউথ ইন্ডিয়ান সিনেমার স্টাইলে উড়ন্ত অ্যাকশন তিনি দেখাতে চান না। বদলে তাঁর অনুপ্রেরণা কিংবদন্তি পরিচালক আকিরা কুরোসাওয়া। কুরোসাওয়া তাঁর রশোমন বা সেভেন সামুরাই ছবিতে যেভাবে সামুরাইদের ঐতিহ্য-লড়াই-অ্যাকশনকে তুলে ধরেছিলেন, সেই পথেই নাকি এগোতে চান পরিচালক। শুধু অ্যাকশনের জন্যই নাকি দিন কুড়ির শিডিউল ধরা হয়েছে। 
অনেকেই নানা। প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ বলছেন চেইমমেল শ্যু ইওরোপ এবং এশিয়া জুড়ে যোদ্ধারা পরতেন। তাহলে পায়ে জুতো থাকলেও শরীরে বর্ম নেই কেন? 
৪) শ্রাবন্তীর নির্বাচন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। তবে দেবী চৌধুরানী হিসেবে তিনি খারাপ চয়েজ নন। প্রায় সমসাময়িক তিন অভিনেত্রী শুভশ্রী, শ্রাবন্তী এবং নুসরত(হাসি পেলেও সত্যি) এঁরা অন্য কারণে যতই চর্চায় থাকুন বা নেটিজেনদের হাসির খোরাক হোন, সমান্তরাল ধারার বেশ কিছু ছবির অভিনয়ে এঁরা কিন্তু যথেষ্ট মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। এছাড়া অনেক দিক মাথায় রেখে বড় বাজেটের ছবিতে স্টারদের নিয়ে কাজ অনেক সময় করতেই হয়।
৫) প্রসেনজিতের চোয়ালে আড়ষ্টতা ইত্যাদি তাঁর জিনগত, এনিয়ে কিচ্ছু করার নেই। কিন্তু গত ৪/৫ বছরের প্রসেনজিৎ অনবদ্য। তাঁর প্রস্তুতি, ডেডিকেশন, সময়ের সঙ্গে তাল রেখে চলা অনবদ্য। সাম্প্রতিক হিন্দি 'জুবিলি' ওয়েব সিরিজ দেখে বোঝা যায় এ এক অন্য প্রসেনজিৎ। তাঁর সেরা অস্ত্র হল অসাধারণ দুই চোখ। ঠান্ডা, শীতল, গভীর এবং সন্ন্যাসীর মতোই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন